শরিফুজ্জামান পল
আমি ধর্ষিতা বলছি
আমি কারো মা, বোন, স্ত্রী, খালা, ফুফু, কন্যা নই-
আমার কোনো লিঙ্গ নেই, আমি ধর্ষকের খাবার।
সমাজের দেশ প্রেমিক? গুরু, টকশোকারদের
গরম বিষয়- ঝড় তোলার বস্তু।
খবরের শিরোনাম, কাগজ বিখ্যাত হবার খবর।
আমি ধর্ষিতা, লজ্জিত নই।
বেহায়াদের জগতে আমি সম্মানীত, পুরস্কৃত?
ক্ষমা চাচ্ছি দুঃসংবাদ বহনের দায়ে!
অভিশাপ দিবো না, কামনা করি
দুয়ারে দুয়ারে পাটি পেতে থাক ধর্ষিতা…
সৃষ্টি হোক নতুন উল্লাস, উন্মাদনা।
মিনতি করি, পাঠশালায় শিক্ষা দাও,
ধর্ষণ করার নিত্য নতুন কৌশল।
কবি আর বিদ্রোহী হইও না।
যদি না পারো বিচার করতে?
যদি না হয় জাগ্রত বিবেক?
কবিতায় আর নারী, প্রেমিকার বর্ণনা দিও না।
সুন্দর চিত্র কারুকার্যখচিত করে তুলে ধরো
আরো বিখ্যাত হই তোমাদের কবিতায় ।
কারগির আর জামদানি কাতান বানিও না;
নারীর প্রিয় শাড়িতে বুনিও না আর কোনো নকশা।
শুধু একটাই নকশি তোলো-
আবেদনময়ী উলঙ্গ নারী দেহের ছবি ।
ধর্ষকদের চিত্র হবে প্রফুল্ল, প্রশান্তিতে ভরা।
মাতৃভূমির মাতৃ কেটে ফেলো।
নতুন করে নাম দাও, লিখো ‘শিশ্নভূমি’।
মতৃভূমিতে মায়ের ধর্ষণ বেমানান।
শিশ্নভূমিতে ধর্ষকরা পাবে সম্মান !
আমি ধর্ষিতা বলছি, অনুরোধ করছি।
ভেঙে ফেল সব ইতিহাস-ঐতিহ্যের স্থাপনা
গড়ে তোলো, মোড়ে মোড়ে উলঙ্গ নারীর মূর্তি।
তোমাদের ধর্ষক খুঁজে পাবে আত্মার শান্তি।
তৃপ্তি পাবে ধর্ষক , পুণ্য হবে তোমাদের শিশ্নভূমি?
অভিশপ্ত হবে ধর্ষিতার মাতৃভূমি।
ব্রঙ্ক্স , নিউ ইয়র্ক।
১২ ই জানুয়ারি ২০২১