রাইজিং কক্স ডেস্ক : করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে কক্সবাজারের টেকনাফে তাবলিগ ফেরত ৪২ জনকে ‘হোম কোয়ারেন্টিনে’ রাখা হয়েছে। তাঁরা বেশির ভাগই নারায়নগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ ও কুমিল্লায় তাবলিগ জামাত শেষ করে চলতি মাসের শুরু দিকে এলাকায় (টেকনাফে) ফিরে আসেন। এর মধ্যে তিন জনের কাছ থেকে করোনা পরীক্ষা করতে নমুনা সংগ্রহ করা হয়। তারা হলেন, টেকনাফের আবদুল গফুর, নুরুল ইসলাম ও দুদু মিয়া।
বুধবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবুল মনসুর ও উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. টিটু চন্দ্র শীলের নেতৃত্বে একটি যৌথ টহল দল উপজেলায় অভিযান চালিয়ে ওই ব্যক্তিদের ‘হোম কোয়ারেন্টিন’ নিশ্চিত করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন টেকনাফ নৌবাহিনীর কর্মকর্তা লে. তৌকির আহমেদ ও থানা পুলিশের এসআই মো. নাজিম, এএসআই অহিদ উল্লাহ প্রমুখ।
উপজেলা প্রশাসন জানায়, গত কয়েকদিনে তাবলিগ জামাত শেষে অর্ধশতাধিকের বেশি মানুষ এলাকায় ফিরেছেন। তারই সুত্র ধরে, তাদের তালিকা তৈরী করে বুধবার সকাল প্রশাসন, স্বাস্থ্য বিভাগ, নৌবাহিনী ও পুলিশের এক দল টেকনাফের ১০টি গ্রামে অভিযান পরিচালনা করে। এসময় সম্প্রতি সময়ে নারায়নগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ ও কুমিল্লায় তাবলিগ শেষে ফিরে আসা ৪২ জনকে ‘হোম কোয়ারেন্টিনে’ থাকতে বাধ্য করা হয়েছে। পাশপাশি এলাকায় করোনা বিস্তার রোধে সামাজিক দূরত্বকরণ, হাত ধোয়াসহ বিভিন্ন প্রচারবিলি চালিয়ে যাচ্ছে টহল দলটি। ৪২ জন হোম কোয়ারেন্টিনে মধ্যে সাবরাং ইউনিয়নের ৩৩ জন বাকিরা টেকনাফ সদর ও পৌরসভার বাসিন্দা। এর মধ্যে বেশির ভাগই গেল এসএসসি পরীক্ষার্থী রয়েছে।
এদিকে তাদের মধ্যে এক বৃদ্ধসহ তিন জনের নমুনা সংগ্রহ করেছে করোনা পরীক্ষার জন্য। তবে তাদের শতভাগ ‘হোম কোয়ারেন্টিনে’ নিশ্চিতে জনপ্রতিনিধিসহ চৌকিদারদের পাহারা দেওয়া হয়েছে।
এদিকে টেকনাফের মানুষ জন আগের চেয়ে অনেক সচেতন হয়েছে। এরা এখন আগের মত বাজারে বা দোকানে আড্ডা দিচ্ছে না দাবী করে নৌ বাহিনীর দায়িত্বরক লে. তোকির আহমেদ বলেন, টেকনাফবাসী আগের চেয়ে অনেক সচেতন হয়েছে। ইনশাআল্লাহ এরা আর ঘর হতে আগের মত বের হচ্ছে না।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. টিটু চন্দ্র শীল বলেন, ‘বর্তমান সময়ে নারায়নগঞ্জ ও মুন্সিগঞ্জ জেলা করোনা সংক্রমণ এলাকা হিসাবে ঝুঁকিপূর্ণ। তাই সেখানে তাবলিগ জামাত শেষে আসা ৪২ জনকে হোম কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়েছে। তবে একটা দিক ভাল, সেটি হচ্ছে তাদের শারিরিক অবস্থা ভাল।’
তিনি বলেন, ‘পাশাপাশি একদিনে ৮জনের নমুনা সংগ্রহ করে কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের করোনা টেস্ট ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। এর আগে ১৬ জনের নমুনা পরীক্ষার মধ্যে ১১ জনের নেগেটিভ এসেছে। বাকিদের এখনও রির্পোট হাতে পাওয়া যায়নি।’
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবুল মনসুর বলেন, ‘করোনা বিস্তার রোধে টেকনাফে একদিনে তাবলিগ ফেরত ৪২ জনকে বাধ্যতামূলক হোম কোয়ারেন্টিনে আওতায় আনা হয়েছে। তাদের নজরদারিতে রাখা হয়েছে, তাবলিগ ফেরত বাকিদের নিয়ে আসা হবে। তাছাড়া উপজেলায় করোনা রোধে সামাজিক দূরত্বসহ সকল প্রকার প্রচারনা অব্যহত রয়েছে তাদের।’
Leave a Reply