করোনা কাল
লাশবহী ঠান্ডা ভ্যানের মতো তোমার শহর; নিঃসঙ্গতার রঙ আঁকে মানুষের মুখ-
ঘুম ভেঙে যায়, স্মৃতির সাইরেন বাজে;মূলত মৃত্যু ছিল পাশবালিশ আমার-গোরস্থানে তন্ন তন্ন করে খুজি নিজের কবর, কোন সমাধিলিপি নেই; স্তব্ধতা দীর্ঘশ্বাস আর বিষণ্নতার টহল- গুহামানুষের জীবন পাঠকরি সুবেসাদিকের সূর্যাস্তে; তোমার শহরে আকাশ নেই ভয় আর মৃত্যুর কোলাজ।
লুপ্ত গ্রন্থাগার
মৃতনদীটার সিথানে লাবন্যময় চর।দূর্লভ সবুজের কোলাহলে ঘুমন্তু দুর্বা কোমল। আমার মৃত্যুর পাশে কোন শ্যাম রঙ রমনী এলিয়ে রেখেছে চুল। দৃষ্টিতে বিষণ্ন সুন্দর, চোখের কোনে শিশিরের জল। ভায়েলিনের উজ্জ্বল সুরে ঢেউ ঢেউ নিঃসঙ্গতা।নির্ঝর কফিনের নিমগ্ন শাদায় মেঘের ঘ্রাণ।
পৃষ্ঠায় পৃষ্ঠায় ব্যর্থতার উপখ্যান – জীবন কোন লুপ্ত গ্রন্থাগার ; নৈঃশব্দিক শব্দে নির্বণ নিরবতার কোলাজ।
মায়াবী মাঠ
মেঘ ও ময়ূর যাত্রায় মায়াবী মাঠ পেরুলে তোমার বাড়ি। মরমি বাতাসে ঢেউ ঢেউ ঘ্রাণ। নিমগ্ন নদীর নির্জন স্বরলিপি; বাউল পায়ের ছাপ লিখে রাখে ভেজাবালি – কয়েকটা রাজহাস জলের সুরে ডুবে যায় ভেসে ওঠে; ছাতিম ফুলের গন্ধে মগ্ন যাদুকরী পুকুর। রূপকথায় স্নান করে বোন চাঁরুমতি বেড়াতে যায় বাবুয়ের নীড়ে; লক্ষ্মী পেঁচার ডাকে রাত্রি গাঢ় হয় আরো। এসব দৃশ্যের মধ্যবর্তী পথে দাড়িয়ে থাকি; একাকী- মায়াবী মাঠের ওপারে তোমার বাড়ি…
নিখোঁজ সন্ধ্যারা
পালকে সূর্যের রক্ত সন্ধ্যারা ঘরে ফিরে। চন্দ্রোদয়ের রাগে জেগে ওঠে অতৃপ্ত বেহালা; মৃত্যুদের চোখের মৌণতা ঘুরে ঘুরে বুকের ভেতর সুর তোলে পূর্ণতার।বিগত পাপ ও পরাজয়ের কত্থকনৃত্যে নিজেকে নিজের বিসর্জন। তুমুল ঘৃণায়, জীবন ও মৃত্যুর দোদুল্যমান দৃশ্যায়নে ডুবদেয় চেনা পথ সব; অসুস্থ পৃথিবী রটিয়ে দেয় আত্মহননের বুলেটিন…
লেখকঃ কবি ও গবেষক
Leave a Reply