আমীর খসরু : গত কয়েকদিন ধরে সাগরে দুটো ট্রলারে করে ভাসতে থাকা নারী ও শিশুসহ ৫শ’র মতো রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশের ভূখন্ডে প্রবেশ ও আশ্রয় দেয়ার জাতিসংঘ ও যুক্তরাজ্যের পৃথক পৃথক অনুরোধ নাকচ করে দিয়েছে বাংলাদেশ।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল বিসালে সোমবার এক বিবৃতিতে এবং একই দিনে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী লর্ড আহমেদ বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেনকে টেলিফোন করে সাগরে ভাসমান নারী ও শিশুসহ ৫শ’ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেয়ার অনুরোধ জানান। ঢাকায় পররাষ্ট্র দপ্তর মঙ্গলবার জানিয়েছে, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার এক বিবৃতিতে বাংলাদেশকে ৫শ’ রোহিঙ্গাকে গ্রহণের অনুরোধ জানিয়ে বলেন, পবিত্র রমজান মাসে আর্তমানবতার চিন্তা করে তাদের বাংলাদেশ গ্রহণ করবে বলে তারা বিশ্বাস করেন। অন্যথায়, ঐ অসহায় মানুষগুলোর পরিণতি হবে ভয়ানক মর্মান্তিক। যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীও ভাসমান রোহিঙ্গাদের গ্রহণের অনুরোধ জানান।
ঢাকায় পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন এর জবাবে বলেছেন, বাংলাদেশ সীমিত সম্পদের মধ্যেও ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে। ভাসমান ৫শ’ রোহিঙ্গা বাংলাদেশ সীমানায়ও নেই। এ সত্ত্বেও মানবিক কারণ দেখিয়ে এ এলাকার অন্য কোন দেশকে এরূপ অনুরোধ জানানো হয়নি। তিনি বলেন, যুক্তরাজ্যের রয়েল জাহাজ এসেও এদের উদ্ধার করতে পারে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের উচিত বাংলাদেশে আশ্রয়গ্রহণকারী ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে তাদের দেশে নিয়ে আশ্রয় দেয়া।
ঢাকায় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মকর্তারা বলছেন, করোনা সংক্রমণের আশংকায় মালয়েশীয় কর্তৃপক্ষ ঐ রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ট্রলার দুটি ঐ দেশের সীমানায় ঢুকতে দেয়নি। এরপর থেকে ঐ রোহিঙ্গারা ট্রলারে করে সাগরে ভাসমান রয়েছেন।
এদিকে, জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর এবং মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস্ ওয়াচ পৃথক পৃথক বিবৃতিতে ভাসমান ৫শ’ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে। উল্লেখ্য, গত ১৫ এপ্রিল দু’মাস ধরে সাগরে থাকা ৩৮২ জন রোহিঙ্গাসহ একটি নৌকা বাংলাদেশের কোস্টগার্ড উদ্ধার করেছে।
Leave a Reply