1. kalamazad28@gmail.com : risingcox.com : Rising Cox
  2. msalahuddin.ctg@gmail.com : RisingCox :
  3. engg.robel@gmail.com : risingcoxbd :
শুক্রবার, ৩১ মার্চ ২০২৩, ১০:২৩ অপরাহ্ন

ভাল নেই আমি, আমার পরিবার এবং প্রাণের উখিয়া

Reporter Name
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২০
  • ৬ Time View

আমি লেখক নয়, সাহিত্যেক নয়,আবার উপন্যাস লেখাও আমার কাজ নয়, আমি একজন অতি সাধারণ চাকরিজীবি। কিন্তু আজকে আমার পরিবারের এবং আমার জন্মভূমি প্রানের উখিয়ার কথা চিন্তা করে না লিখে পারছি না।

আগে আমার পেশা সম্পর্কে একটু আলোকপাত করি, আমি গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগের অতি নগন্য একজন মেডিকেল টেকনোলজিষ্ট,
তাই আমার পেশাগত দক্ষতা থেকে করোনাভাইরাসের মহামারি বিষয়ে কি কিছু লিখতে বসেছি। এ লেখার মাধ্যমে কাউকে হেয় করা, কারো মনে কষ্ট দেয়া বা কাউকে আগাত করা আমার উদ্দেশ্যে নয়। যদি কাউকে কষ্ট দিয়ে ফেলি কড় জোড়ে ক্ষমা চাচ্ছি।
আমি চাই আমার প্রানের উখিয়ার প্রতিটি মানুষ ভাল থাকুক, আর আমি যেহেতু এ পেশায় তাই আমার এ কয়েকটি কথায় হইতো ২-১ জন মানুষের উপকার হতেও পারে।

যদি একজন মানুষের ও উপকার হয় তবে আমি ধন্য।
অনেক পঁচা কথা হল, আসল কথায় আসি।

আমি একদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স উখিয়াতে কর্মরত ছিলাম।

বর্তমানে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স টেকনাফ এ আছি।
আমি প্রথমে ধন্যবাদ জানায় আমাদের উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, জনাব ডাক্তার টিটু চন্দ্র শীল স্যারকে।যার তত্বাবধানে এগিয়ে যাচ্ছে টেকনাফ উপজেলার স্বাস্থ্যসেবা এবং এ করোনা মহামারীতে ও আমাদের মেডিকেল টেকনোলজিষ্ট টিমকে সঠিকভাবে ব্যাবহার করে আজকে কক্সবাজারে সবচেয়ে বেশি টেষ্ট করার গৌরব অর্জন করেছেন।

ধন্যবাদ জানায় আমাদের হাসপাতালে সবার প্রিয়, ডাঃ প্রনয় রুদ্র( MODC) sir কে তিনি সারাক্ষণ ব্যাস্ত থাকেন suspected patients খুঁজে বের করারা কাজে।আর আমাদের দেন সঠিক রুগির তথ্য।যার কারনে আমরা সবচেয়ে বেশি সংখ্যক suspected patients এর বাড়ি বাড়ি গিয়ে স্যাম্পল কালেকশন ও টেস্ট করাতে পারি।

আমি ধন্যবাদ জানাই আমার ল্যাবের প্রত্যেকজন কে,যারা অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে গত ১লা এপ্রিল থেকে দিন রাত।

আমি বাড়িতে যাই না গত বিশ দিন যাবত, কারন আমার কারণে যেন আমার পরিবারের কেউ করোনা পজিটিভ না হয়।

আর গত তিন দিনে শুনলাম ৪জন করোনা পজিটিভ রুগি পাওয়া গেছে উখিয়াতে যা খুবই ভয়ংকর ব্যাপার।
আমি উখিয়াতে করোনা পজিটিভ হওয়ার একদিন আগে এক বড় ভাই কে একটা পোস্ট করেছিলাম, যা অনেকটা এ রকম,,,,

উখিয়ার সবাই নিশ্চন্তে ঘুমাচ্ছে, মনে করতেছে উখিয়ায় করোনা পজিটিভ রুগি নাই, আসল চিত্র হল, উখিয়ায় টেষ্ট কম তাই রুগি নাই। আমদের মত টেষ্ট বাড়াতে বলেন, না হয় উখিয়া মহামারী ধারন করবে।

টেকনাফ উপজেলা এ যে রুগী গুলো সনাক্ত হয়েছে কোন না কোন ভাবে সবাই ঢাকা থেকে আসা। ওদের কাছ থেকে জেনেছি সবার সাথে কেউ না কেউ উখিয়ার বিভিন্ন স্থানে গাড়ি থেকে নেমেছিল। যারা বিভিন্ন জায়গা বা পাড়ার নেমেছিল তাদেরকে কি টেষ্ট এর আওতায় আনা গেছে?? উত্তর না।

আমাদের UH&FPO মহোদয় সবার সাথে দফায় দফায় বৈটক করে করেছেন স্থানীয় সরকারের সবার সাথে, মিডিয়া কর্মীদের সাথে, জনপ্রতিনিধিদের সাথে। বুঝিয়েছেন এলাকার বাহির থেকে একজন ব্যাক্তিও যদি টেকনাফে আসে সাথে সাথে যেন ওনাকে অথবা MODC কে জানানো হয়।

আমরা মেডিকেল টেকনোলজিষ্টরা MODC স্যারের সাহায্য নিয়ে আগত ব্যাক্তির বাড়িতে গিয়ে স্যাম্পল কালেকশন করে নিয়ে আসি এবং টেষ্ট এর আওতায় নিয়ে আসি। যাতে করোনা ভাইরাস গোটা এলাকায় ছড়িয়ে পড়তে না পারে। এবং প্রশাসন তাদের প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহন করে।

এর কোন একটা কি উখিয়াতে এ কয়দিনে হয়েছে???
আমাদের UH&FPO মহোদয় সব সময় আমার সাথে বসে আলাপ করেছেন কিভাবে কালেকশান, প্রসেসিং করলে সুবিধা হয়। আমাকে দিয়েছেন কাজ করার স্বাধীনতা।

যদিও ২৪/৭ কাজ করতে হচ্ছে নিয়মিত।

তাই আমরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স টেকনাফ থেকে বলতে পারি ইনশাআল্লাহ আমরা করোনার মহামারী ঠেকাতে পারব।

কারণ আমরা চিন্নিহিত করেছি রেড জোন গুলো। আমরা চষে বড়িয়েছি হোয়াইক্ষ্যং থেকে সেন্টমার্রটিন দ্বীপ অঞ্চল পর্যন্ত এমন কোন এলাকা টেকনাফ এ নাই যেখানে আমাদের কালেকশন টীম যায় নাই।

এমন কোনদিন যায় নাই, ক্লান্তিতে আমরা হাপিয়ে উঠি নাই বা ঘামে ভিজে ছুপছুপ হই নাই কিন্তু আমি বা আমার টীম দ্বায়িত্ব থেকে পালিয়ে যাই নি। আল্লাহ আমাদের রক্ষা করুক।
সবার কাছে দোয়া চাই।

উখিয়া রাজনীতিবিদ, প্রশাসন, স্বাস্থ্য সেক্টর, জনপ্রতিনিধি, মিডিয়া কর্মী ও সাধারণ জনগণকে বলছি, এখন ও সময় আছে বাহির থেকে আসা বা লক্ষ্মণ প্রকাশ পাওয়া সবাইকে টেষ্টের আওতায় নিয়ে আসেন। যত রুগী সনাক্ত হবে সংক্রমণের ঝুঁকি তত কম হবে।

আমার আকুল আবেদন, আসুন সবাই মিলে প্রানের উখিয়ার মানুষকে বাচাই। নিজে টেষ্ট করি অন্যকে টেষ্ট করতে উৎসাহিত করি।

না হয় উখিয়া হবে গাজীপুর বা নারায়ণগঞ্জ।
তাই বলি, বাড়িতে থাকুন, সামাজিক দুরত্ত বজায় রাখুন, সরকারের নিদর্শনা মেনে চলুন।

লেখক : হুমায়ুন রশিদ শাহিন,
বি এস সি ইন হেলথ্ টেকনোলজি (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়)
মেডিকেল টেকনোলজিষ্ট (ল্যাব)
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, টেকনাফ।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2023 Rising Cox
Theme Customization By NewsSun