1. kalamazad28@gmail.com : risingcox.com : Rising Cox
  2. msalahuddin.ctg@gmail.com : RisingCox :
  3. engg.robel@gmail.com : risingcoxbd :
বৃহস্পতিবার, ৩০ মার্চ ২০২৩, ০৮:২৭ অপরাহ্ন

স্বপ্নযাত্রা

Reporter Name
  • Update Time : শনিবার, ২ মে, ২০২০
  • ৩ Time View

রুহুল কাদের বাবুল
নজরবন্দী আকাশ। হিমেল হাওয়া, ঝিরঝিরে। হাতের লাগলেই মেঘ। শুভ্র, ধবধবে। একটি ছেলে হলে শুভ্র রাখার কথা ছিল। কপালপোড়া আমার। ছেলের মুখ দেখা হয়নি। ছেলের আশায় আশায় ৫ কন্যার জনক আমি। ছেলে মেয়ের কথা বিজ্ঞেস করলে ছড়ার ছন্দে বলি ‘ বেশুমার কন্যা আমার গুনে গুণে দেখ, জ্যোতিষি গুণিয়া বলে এক গন্ডা এক’। তবে আমি কন্যাদের ভালবাসি। তারাও আমাকে। কপালে পোড়া দাগ নেই। হাওয়ায় মিলিয়ে গেছে। হিমেল হাওয়ায় সবকিছু মিলিয়ে যায়। কোথায় যায়? কিভাবে যায়? জানা হয়নি কখনো। জানার আগ্রহও নেই। আমি বিজ্ঞানের ছাত্র নই।
যানটি হাওয়ায় হাওয়া! শোঁ শোঁ আওয়াজ ছাড়া কিছুই দৃষ্টিগ্রাহ্য নয় আর। যাচ্ছি তো যাচ্ছি; হাওয়ায় মিলিয়ে যাচ্ছি। আলোয় মিলিয়ে যাচ্ছি! উত্তরটা জানা নেই। জানার আগ্রহও নেই। আমি ভাজতে জানিনা খই। শুধু হইচই। ঘোরের মধ্যে ঘোর॥ হঠাঃ যেনো ভোর। আকাশ জোড়ো আলোর ঝলকানি! পাখির কলতান। পশুর চিৎকার। নদলি জল চলে কল কল। সবকিছু মিলিয়ে অদ্ভুত এক শিহরণ। আমি আছি দরিয়া পাড়ে . একা। দরিয়ার গরিয়ায় ফেনিল উচ্ছাস। আনন্দে মাতোয়ারা উড়াল পাখিরা। পেছনে পাহাড়। অনন্ত আকাশের নীচে আমি, এক্ াবিশাল বটবৃক্ষেও ছায়ায় বসে আছি, একাকিত্বেও বিষন্নতা এখনো আমাকে ছুঁতে পারেনি। ভীতিকর কিছুই আমার দৃস্টিগোচরে নেই। তবে আমি একা।
আকাশের রঙের ছড়াছড়ি, লাল নীল হলুদ বেগুনি সবুজ বাদামী গোলাপী আর কত কি রকম । সব্ রঙের নাম জানা নেই আমার। একটি রঙের নাম দিয়েছি আমি রসুনী। রসুনের কোয়ার মতো রঙ। সাদা ধবধবে। তাকে শুভ্র বলা যেতো। শুভ্র নামে রঙের নাম দেওয়া আমার ইচ্ছা নেই। শুভ্র তো হবে আমার ছেলের নাম। আমার ছেলে ভাগ্যে নেই। আমার নাকি মেয়ে ভাগ্য। এটা জ্যোতিষির কথা। ইসলামে, মেয়ের জনক-জননীদেও নিশ্চিত জান্নাত প্রাপ্তির কথা বলা আছে। সেই কথাতে আমার বিশ্বাস আছে। ইসলামেও আমার দৃঢ় বিশ্বাস।
এখানে সময়ের দাম নেই। সময়ের পরিমাপও নেই। নিরেট কালেঅ রাতের আগ্রাসনও নেই। এখানে আলোর নাচন আছে। রঙের ছড়াছড়ি আছে। মনে হলো, আকাশে বিজলি চমকাচ্ছে। চারিদিকে আলোর ঝলকানিতে তাও বোঝার উপায় নেই। অনুভবে আছে। অস্তিত্বে নেই। এক অপরুপ অদ্ভুত পরিস্থিতিতে আমি এখন লীন। আমি কি আমাতে আছি, নাকি আমি প্রকৃতিতে লীন হয়ে আছি, আমি অনুভবে আছি। অস্তিত্বে নেই। হারিয়ে ফেলেছি খেই। তাও বোঝার উপায় নেই।
এতটুকু বুঝি আমি বেঁচে আছি। একা একটি গ্রহে। গ্রহের নাম জানা নেই আর্মা আমি তার নাম দিয়েছি মুনিয়া। দুনিয়ার সাথে মুনিয়ার একটি মিল আছে। ভাই জোড়া নাম। বোন জোড়া নামও বলা যায়। চাঁদের ইংরেজি সাম মুন। এখানে মুনের অবস্থান সার্বক্ষনিক। ‘দুনিয়ার মতো রাতে আছি দিনে নেই’ এ রকম নয়। এখানে রাত দিন নেই। সর্বক্ষণ মুনের আলোয়, আলোর ঝলকে বেঁচে থাকা, জেগে থাকা, অস্তিত্বের ঘোরেথাকা। এক অদ্ভুত আনন্দালোকে থাকা। তাই গ্রহের নাম দিয়েছি মুনিয়া। মুনিয়া একটি পাখির নামও আছে। শখ করে পালিত পাখিকেও ্অনেকেই মুনিয়া নামে ডাকে। মেয়েদের নামও মুনিয়া রাখা হয়। এসব নামের সাথে গ্রহটির কোন সম্পর্ক নেই। থাকলেওথাকতে পারে। তবে, আমি ভেবে দেখিনি। আমি ভূগোলের ছাত্র নই।
গ্রহটি নড়ে উঠল একবার। কয়েকবার। শোঁ শোঁ আওয়াজ। যানটি কি আবার সচল হয়েঁেছ!বোঝার উপায় নেই। আমার কি অস্তিত্ব নেই। আমি কি স্বপ্নের ঘোরে আছি। নাকি বাঁচা মরার সন্ধিক্ষনে! অলৌকিক একটি আবহে ক্ িআমি আছি! ধীরে ধীওে দৃশ্যমান হচ্ছে সবকিছু। বিশাল একটি দালানের অস্তিত্ব দৃশ্যমান হলো প্রথম। দালানের রঙ রসুনী। রসুনের কোয়ার মতো রঙ, শুভ্র, ধবধবে। দালানটির নাম হতে পাওে হোয়াইট হাউস বা রসুনি রিসোর্ট। প্রায় শততলা দালানের সর্বোচ্চ কক্ষে আমি একা। জানালা পথে আকাশ দেখা যায়। প্রয়োজনে ছোঁয়াও যায়। হিমশীতল হাওয়ায় দেহ মন জুড়িয়ে যায়। নীচে তাকানো যায়না। কিছুই দৃশ্যমান নয়। কেন নয়, তা জানিনা।
অল্পক্ষণ পর কানে ভেসে এলো রিনিঝিনি শব্দ,নুপুরের নিক্কন ধ্বনি। সুমধুর। অদ্ভুত এক ভালোলাগার ঘোওে আমি এখন। দৃশ্যমান হলো, এক ঝাঁক ডানওয়ালা পরী, নীল নয় না, শুভ্র বসনা-আমি যার নাম দিয়েছি রসুনী, রসুনের কোয়ার মতো বসন তাদের। ফুরফুওে মেজাজে নানাবিধ মুদ্রায় নাচের মহড়া দিচ্ছে যেন তারা। গোলাপ,চামেলী শেফালী বেলী জবা শাপলা পদ্ম কদম্ব নানারকম ফুলের ফুটে উঠার প্রক্রিয়ায় তাদেও নানাকরম ভঙ্গিমা। দালানের দেওয়ালগুলো পর্দায় ঢাকা। অদ্ভুত এক রঙ পর্দার। যেন আকাশের ছায়াপথ, পর্দাও ওপার থেকে ভেসে আসছে সূরের মূর্চ্ছনা। সূরের দোলায় আন্দোলিত হচ্ছে ডানাওয়ালা পরীরা। হটাৎ আবির্ভূত হলো, ডানাকাটা এক পরী। ধবল জোছনার অপরূপ দ্যুতি ছড়িয়ে যেন স্বর্গের অপ্সরা। তিনি আসলেন ধীরলয়ে। বসলেন আমার পার্শ্বের খাটে। আমার মাথায় তার আলতো হাতের ছোঁয়া। মুখে তার ভাষা নেই। ইশারা আছে চোখে। নীল সবুজের চোখ দুটোতেই প্রচন্ড রহস্যময়তা। রহস্যের ভাষা আমি বুঝি না। তবে তার আবেগ অনুভূতি আমাকে মোহাবিষ্ট করেছে। মনে হলো তিনি আমাকে পাট করতে চেষ্টা করছেন। উপলব্ধিতে তিনি আমাকে আচ্ছন্ন করলেন। তারপরই ঘটতে থাকল ঘটনাগুলো।
দেখি, ফলে-ফুলে সজ্জিত অপরুপ এক বাগান। আর্মা ইচ্ছেরা জাগছে। যদি ইচ্ছে হয় ফলে . আসছে ফল, বাহারী ফলের ্অপরূপ রূপে সাজানো অনন্য এক স্ট্রে সাজিয়ে। যদি ইচ্ছে হয় ফুলে আসছে ফুল, নানান সুরভে মালা হয়ে তোড়া হয়ে স্ট্রে সাজিয়ে কত বাহাওে তার ইয়াত্বা নেই। ইচ্ছে হলেই খাওয়া যায়। ইচ্ছে হলেই ছোঁয়া যায়। আমার শুধু দেখার ইচ্ছে ।বিছানায় আধশোয়া অদ্ভুত এক ভঙ্গিমায় আমি আছি চেতনে-অবচেতনে। আমার ইচ্ছেগুলো উড়ছে, ফুটছে। আমি আন্দোলিত হচ্ছি,মোহিত হচ্ছি, উৎফুল্ল হচ্ছি। আমাকে নিবিষ্ট মনে পাঠ করেই চলেছেন তিনি। ডানাকাটা পরী। যেন স্বর্গেও অপ্সরি। আমার গল্পের নায়িকা। যে গল্প লেখার আমার জাগছে। আমার ইচ্ছেরা ছুটোছুট্ িকরছে আমার মগজে, মননে। আমি তার নাম দিয়েছি পাঠিকা। তিনি আমাকে নিবিষ্ঠ মনে পাঠ করছেন।
আমি যে পাঠযোগ্য তা আমার কখনো উপলব্ধিতে ছিল না। ছোটকাল থেকেই আমি বই পাঠে অভ্য¯। বই দেখলেই আমার পাঠ করতে ই্েচছ জাগে। দুনিয়ার প্রতিটি বই পাঠ করার প্রচন্ড ইচ্ছা আমার। দুনিয়া জোড়া একটি পাঠাগার করতে চাই আমি। এ যাবৎ প্রকাশিত প্রতিটি বইয়ের অন্তত একটি করে কপি থাকবে সেখানে। বই পাঠে হৃদয় মন আন্দোলিত হয়। শরীওে এক ধরণের ফুরফুওে আমেজের সৃস্টি হয়। জানা যায় অনেক কিছু; পুরো দুনিয়াকে জানতে বই পাঠের বিকল্প নেই। তাইা সৃষ্টিকর্তা মানুষ সৃষ্টি করেছেনস এই পড়তে নির্দেশ দিয়েছেন। যুগে যুগে মহাপুরুষেরাও একই নির্দেশ দিয়েছেন। কেই আদিষ্ট হয়ে আর কেউ স্ব উপলব্ধিতে।
আমিও কি একটি বই! বইয়ের বিকল্প কিছু। বুঝতে পারছিনা। এটুকু বুঝি আমিও পাঠযোগ্য। দুনিয়ার সকল সৃষ্টিই পাঠযোগ্য। কিন্তু আমিতো এখন মুনিয়া। মুনিয়া ও কি দুনিয়ার মতো। তা এখনো আমার কাছে ষ্পষ্ট নয়।
পাঠিকার ইশারায় তার পাশাপাশি হাঁটা শুরু করলাম। কখন দালান থেকে বেরিয়ে এসেছি, জানিনা। দরিয়ার তীর ধওে হাটছি দুজন। পেছনে পাহাড়। সুনীল আকাশ যেন মাথা ছুঁই ছুঁই। চাঁদের আলোয় হাসছে বালুর চর। লাল কাঁকড়ার ছুটাছোটি যেন দরিয়া নগর-কক্সবাজার। হিমশীতল হাওয়ায় অজানা এক শিহরণ॥ অজানা এক অনুভূতি। কারো মুখে কথা নেই। ভাষা নেই। আমি কি বোবা হয়েগেছি? পাঠিকাও কি বাবা? ইশারায় ছলা-কলা
পুলকে পুলকে , পুলকিত মন
হৃদয়ে কবিতা জাগে;
তুমি আছো তাই আমি আছি
ভালোবাসি অনুরাগে।
কথা নেই মুখে ভালোবাসি সুখে
এতোটুকু জানি শুধু;
হৃদয়ে দুলছে ভালোবাসা ভাসি
বালুচর জ্বলে ধু ধু
কয়েকটি কবিতার লাইন লিখতে ইচ্ছে হলো। হাতে কলম নেই, কাগজও নেই। পাঠিকার মুখে হাসি আছে। ভালোবাসবাসি আছে। প্রজাপতির উড়াল দেখছি দুজনে। রঙ-বেরঙের প্রজাপতি। আমাদেও ঘিরেই যেন তাদেও উড়ালিপনা । প্রজাপতির উড়ালিপনায় আছে শিল্পের ছোঁয়া। আসসালাতু হাইয়ুম মিনান্নাউম। ঘুমের চাইতে নামাজ উত্তম। ভোরের আজানে ভেঙে দেখি আমি বিছানায়। মুনিয়া থেকে দুনিয়ায়।
লেখক : কবি- অনুবাদক। প্রকাশিত গ্রন্থ : ৩টি, সম্পাদনা গ্রন্থ : ১টি।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2023 Rising Cox
Theme Customization By NewsSun