1. kalamazad28@gmail.com : risingcox.com : Rising Cox
  2. msalahuddin.ctg@gmail.com : RisingCox :
  3. engg.robel@gmail.com : risingcoxbd :
বৃহস্পতিবার, ৩০ মার্চ ২০২৩, ০৮:২০ অপরাহ্ন

লকডাউনের ভেতরে বাইরে

Reporter Name
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ৭ মে, ২০২০
  • ৫ Time View

মাইনউদ্দিন হাসান শাহেদ

গত তিনদিনের সরকারি হিসেব দেখলেই বুঝা যায় করোনা আমাদের বেশ তাড়া করছে। প্রতিদিনই আক্রান্তের হার বাড়ছে। এতে মানুষের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। এই উদ্বেগ- উৎকন্ঠার মধ্যে সরকার লকডাউন ধীরে ধীরে শিথিল করার একটা সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে। এতে মানুষের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা তৈরি হচ্ছে।

অবশ্যই লকডাউন ঘোষণার শুরু থেকেই শিথিলতার লক্ষণ ছিলো। আমরা কেউ মানছি আর কেউ মানছি না। এ নিয়ে অনেক অালোচনা ও বির্তক হয়েছে। মানুষ এ নিয়ে বিভিন্ন ভাবে সরকারের সমালোচনাও করে আসছে। মূলত সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের মধ্যে সমন্বয়হীনতায় কারণটি এখানে স্পষ্ট ছিল।

দেখা গেছে, সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণার পর মানুষ লকডাউন না মেনে শহর থেকে গ্রামে ছড়িয়ে পড়লো। কোন ভাবে থামানো যায়নি। তখনই দাবি উঠেছিল, লকডাউন কার্যকরের জন্যে কারফিউ জারি করা হোক। এরমধ্যে সরকার কয়েক ধাপে ছুটি বাড়িয়ে সংকট থেকে উত্তরণের চেষ্টা চালাচ্ছে। মানুষকে ঘরে রাখতে খাদ্য সহায়তাও দিয়ে আসছে। কিন্তু এ কার্যক্রম পর্যাপ্ত না হওয়ায় নিম্ন আয়ের মানুষ কাজের সন্ধানে প্রতিদিন বাড়ির বাইরে চলে যাচ্ছে। সামনে এ পরিস্থিতি আরও জটিল হওয়ার আশংকা রয়েছে। অবস্থা এমন হয়ে দাঁড়িয়েছে একদিকে জীবন অন্যদিকে জীবিকা নিয়ে মানুষ হিমশিম খাচ্ছে।

করোনা মোকাবিলার দৃশ্য শুরু থেকে বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, মানুষকে ঘরমুখো করতে প্রশাসন, পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যথেষ্ট বেগ পেয়েছে। আক্রান্ত রোগীর মধ্যে একটি বড় অংশ আমাদের সুরক্ষা দিতে গিয়ে এসব সংস্থার লোকজন আক্রান্ত হয়েছেন। অনেকের মৃত্যু হয়েছে। এমন অবস্থায় তাদের মধ্যেও ক্লান্তি চলে এসেছে।
কথা হলো, লকডাউন না মানার সংস্কৃতির মধ্যে আমরা কমবেশি যুক্ত। সরকারের এ উদ্যোগকে অকার্যকর করার পেছনে বেশি দায়ী গার্মেন্টস মালিকেরা। তারা সারাদেশ থেকে বারবার শ্রমিক জড়ো করে বির্তক সৃষ্টি করেছেন। দেশের অর্থনীতি সচল করার নামে করোনা মোকাবিলায় নেয়া সরকারের পদক্ষেপকে তারা বাঁধাগ্রস্থ করেছে। শুধু তাই নয়, অনেক মন্ত্রীও প্রতিনিয়ত গার্মেন্টসমুখী শ্রমিকের ঢল নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। কিন্তু তারপরও ঢাকা,নারায়ণগঞ্জ ও চট্টগ্রামসহ গার্মেন্টস এলাকায় শ্রমিক আসার স্রোত থামানো যায়নি। গন পরিবহন বন্ধ থাকলেও বিকল্প ব্যবস্থায় শ্রমিকেরা কর্মক্ষেত্রে ফিরে যাচ্ছে। এতে তারা চাকুরী বাঁচানোর জন্যে জীবনের ঝুঁকি নিতেও দ্বিধা করেনি।
কথা ছিল, গার্মেন্টস মালিকেরা সীমিত পরিসরে কারখানা চালু করবে। কিন্তু প্রতিদিন সংবাদ মাধ্যমে শ্রমিকের মিছিল প্রমাণ করে কারখানাগুলো সেই পুরোনো চেহারায় ফিরেছে। এসব নিয়ে সমালোচনার মুখে গার্মেন্টস মালিকদের সংগঠন শ্রমিকদের সব দায়দায়িত্ব নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

এখন কৃষকের ঘরে ধান তোলার উপযুক্ত সময়। কৃষকদের সমস্যার কথা চিন্তা করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সবাইকে সহযোগিতায় এগিয়ে আসার আহবান জানান। এতে ছাত্রলীগ বেশ উৎসাহ নিয়ে ধান কাটতে মাঠে নামে। তারা সারাদেশে প্রশংসিত হয়। কিন্তু কিছু মন্ত্রী,সাংসদ ও নেতানেত্রী এ উদ্যোগকে বির্তকিত করে তুলে। অভিযোগ উঠে, নেতারা এ কাজ করতে গিয়ে স্বাস্থ্য বিধি ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখেনি। এতেও লকডাউন অকার্যকর হওয়ার বিষয়টি ফুটে উঠে।
গতকাল সোমবার সীমিত আকারে শপিং মল খোলার ঘোষনায় মানুষ প্রতিবাদী হয়ে উঠেছে। আগামী ১০ মে থেকে এ ঘোষনা কার্যকরের কথা রয়েছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। এ সিদ্ধান্তকে আত্মঘাতি ও করোনা মোকাবিলায় ঝুঁকি মনে করছেন সচেতন মহল। মানুষ মনে করে, একদিকে ঘরে থাকার জন্য তাগাদা দেওয়া আর অন্য দিকে শপিং মল খুলে দেওয়া দুটো তো এক সঙ্গে হয় না।

যাক সামনে কয়েকটা দিন তো এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের সময় হাতে আছে। নিশ্চয়ই সরকার মানুষের মতামতের গুরুত্ব পুনরায় বিবেচনায় আনবে। এ বিষয়ে আজ মঙ্গলবার স্বাস্থ্য মন্ত্রী জাহিদ মালিকও বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে মত নেয়ার কথা বলেছেন।

এখন আলোচনায় আসছে, গন পরিবহণও সীমিত আকারে খুলে দেওয়া হবে। এতে এক জেলার মানুষ আরেক জেলায় বাঁধাহীনভাবে চলাচল করতে পারবে। তাতে করোনা মহামারী হতে সময় লাগবে না।
যাই হোক সরকারের কোন সিদ্ধান্তের বিরোধিতা মানে সরকার ও দেশের বিরুদ্ধে নয়। এখন দেশের এ ক্রান্তিলগ্নে মানবিক বিপর্যয়ে সরকারের সমালোচনায় ব্যস্থ না হয়ে নিজেদের মতো আমরা সিদ্ধান্ত নিই। আমরা নিজেদের ও পরিবার- পরিজনের বাঁচার তাগিদে নিজেরাই করোনা মোকাবিলায় পদক্ষেপ নিতে পারি। সবার মতো, আমারও মত হলো শপিং মল খোলার পরও আমরা যাবো না। এই ঈদে নতুন কাপড়- চোপড় কেনায় যে অর্থ ব্যয় হবে তা করোনা মোকাবেলায় আশপাশের অভুক্ত মানুষের জন্য বিলিয়ে দেবো। এভাবেই আমরা এবার ঈদের আনন্দ ভাগ করে নিতে পারি। তাতে সামাজিক দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি সবার মঙ্গলও হবে।

লেখক : সাংবাদিক
৫ মে ২০২০

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2023 Rising Cox
Theme Customization By NewsSun