1. kalamazad28@gmail.com : risingcox.com : Rising Cox
  2. msalahuddin.ctg@gmail.com : RisingCox :
  3. engg.robel@gmail.com : risingcoxbd :
বৃহস্পতিবার, ৩০ মার্চ ২০২৩, ০৫:২৮ অপরাহ্ন

মাসউদ শাফির অপ্রকাশিত সাক্ষৎকার

Reporter Name
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ৭ মে, ২০২০
  • ৬ Time View

পুরনো সমাজের গলদ দূর করে নতুন সমাজ বিনির্মাণ করতে হবে-রুহিন হোসেন প্রিন্স

‘তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি’ কক্সবাজার জেলা শাখার উদ্যোগে পালিত‘ মানববন্ধন কর্মসূচীতে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দিতে এসেছিলেন জাতীয় কমিটির সংগঠক, সিপিবি কেন্দ্রীয় সদস্য, ৯০ দশকের ছাত্র আন্দোলনের তুখোড় ছাত্রনেতা, পরিবেশ আন্দোলনের নেতা ও ছাত্র ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় সংসদের সাবেক সভাপতি রুহিন হোসেন প্রিন্স। তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর সহ জাতীয় সম্পদ রক্ষার আন্দোলন, রাজনীতি, শিক্ষা, বাম প্রগতিশীল আন্দোলন, ছাত্র আন্দোলনসহ দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে ২০১২ সালের ১৫ মার্চ বৃহস্পতিবার তাঁর সাথে একান্ত আলাপচারিতায় অংশ নেন ছাত্র ইউনিয়ন কক্সবাজার জেলা সংসদের সহ-সভাপতি কবি মাসউদ শাফি। সাথে ছিলেন ঢাকা মহানগর সিপিবি নেতা ও সাবেক ছাত্র ইউনিয়ন (চুয়েট) নেতা প্রকৌশলী সরদার আমিন ও ছাত্র ইউনিয়ন জেলা সংসদের সাবেক সভাপতি, তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির কক্সবাজার জেলা শাখার সদস্য সচিব যুবনেতা করিম উল্লাহ। মাসউদ শাফি প্রয়াত হয়েছেন ২০১৩ সালের ২৩ ডিসেম্বর। তিনি মারা যাওয়ার পর অনেকেই তার প্রকাশিত ও অপ্রকাশিত লেখা নিয়ে একটি সংকলন করার চিন্তা করলেও এখনো কেউ করতে পারেনি নানা সীমাবদ্ধতার কারণে। এ দায় আমিও (কালাম আজাদ) এড়াতে পারি না। আজ হঠাৎ আলম তৌহিদ ভাইয়ের বই নিয়ে আমার রিভিউটি খুঁজতে গেলে অপ্রকাশিত লেখাটি পেয়ে যায়। পাওয়া মাত্র লোভ সামলাতে না পেরে মাসউদ শাফির অগণিত পাঠক ও গুণগ্রাহীদের জন্যে এ অপ্রকাশিত আলাপচারিতার চুম্বক অংশ রাইজিং কক্স-এ প্রকাশ করা হলো- কালাম আজাদ।
প্রশ্ন: কক্সবাজার এসে আপনার কেমন লাগছে?
রুহিন হোসেন প্রিন্স : কক্সবাজারকে শুধুমাত্র আমরা পৃথিবীর বৃহত্তর সমুদ্র সৈকত হিসেবে বিবেচনা করি না; এটি সম্পদে ভরপুর একটি এলাকা। এছাড়া বঙ্গোপসাগরে রয়েছে অফুরন্ত সম্পদ। এই জায়গায় আসলেই ভালো লাগে। খুবই ভালো লাগছে।
প্রশ্ন: এখন দেশের অবস্থা কেমন বলে মনে হয়?
রুহিন হোসেন প্রিন্স : দেশটা তো চলছে টেনেটুনে; দেশের মেহনতি মানুষই দেশটাকে এগিয়ে নিচ্ছে। শাসকরা বরং এই অগ্রগতি টিকিয়ে রাখতে চাইছেন। সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিপদ, সাম্রাজ্যবাদী শক্তির আধিপত্য বিস্তার আর লুটপাটের কবলে রয়েছে বাংলাদেশ। এই অবস্থার এখনো কোন পরিবর্তন করা যায়নি। দেশের সংকট অব্যাহত রয়েছে।
প্রশ্ন : বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো নিয়ে আপনার ভাবনা কি?
রুহিন হোসেন প্রিন্স : একেকটা রাজনৈতিক দল একেকটা শ্রেণীর প্রতিনিধিত্ব করে। বাংলাদেশের তথাকথিত বড় দলগুলো- যারা ক্ষমতায় এবং সংসদীয় পদ্ধতি হিসেবে বাইরের বড় দলগুলো ধনীক শ্রেণীর প্রতিনিধিত্ব করছে। এদের ভূমিকা ওই শ্রেণীর স্বার্থেই পরিচালিত হচ্ছে। এর বাইরে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টিসহ আরো কতেক বাম প্রগতিশীল দলগুলো সাধারণ মানুষের কথা শ্রমজীবী মানুষের স্বার্থ রক্ষায় ভূমিকা পালন করে চলেছে। এছাড়া বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষকে বড় রাজনৈতিক দলগুলো টিকে থাকা ও ক্ষমতায় যাওয়ার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। অন্যদিকে কমিউনিস্ট এবং বামপন্থীরা বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষকে একত্রিত করে তাদের স্বার্থের লড়াইকে উদ্বুদ্ধ করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
প্রশ্ন: জাতীয় সম্পদ তেল-গ্যাস-বিদ্যুৎ বন্দরসহ জাতীয় সম্পদ রক্ষায় অব্যাহত আন্দোলন- কর্মসূচী নিয়ে বলুন?
রুহিন হোসেন প্রিন্স : জাতীয় সম্পদ রক্ষার লড়াইয়ে আমরা রাজপথে রয়েছি। ঢাকায় মহাসমাবেশ থেকে ঘোষিত কর্মসূচীর, জাতীয় কমিটির ৭ দফা আদায়ের সভা-সমাবেশ, অবস্থান সবকিছু চলছেই। দেশের সকল জেলা-উপজেলায় এই আন্দোলনকে আরো বিস্তৃত করার কাজে আমরা নিয়োজিত রয়েছি।
প্রশ্ন: জাতীয় সম্পদ রক্ষার আন্দোলনে দেশের বৃহৎ জনগোষ্ঠীর সমর্থন পাচ্ছেন বলে কি মনে হয়?
রুহিন হোসেন প্রিন্স : জাতীয় সম্পদ রক্ষায় দেশের বৃহৎ জনগোষ্ঠীর সমর্থন তো রয়েছেই। এজন্যইতো আমরা বিবিয়ানা থেকে পাইপ লাইনে ভারতে গ্যাস রপ্তানি বন্ধ করতে পেরেছি। সুনেত্র রশিদপুর সহ দেশের বিভিন্ন গ্যাসক্ষেত্র থেকে জাতীয় সংস্থার মাধ্যমে গ্যাস উত্তোলনের ঘোষণা দিতে সরকারকে বাধ্য করা গেছে। মানুষ, জমি-জলা, পরিবেশ ধ্বংস করে দিনাজপুরের ফুলবাড়িতে উন্মুক্ত খনন পদ্ধতিতে কয়লা তোলার সিদ্ধান্ত থেকে সরকারকে বিরত করা গেছে। এসব তথ্যই বলে- এই আন্দোলনে আমরা দেশের বৃহৎ জনগোষ্ঠীকে এক করতে পেরেছি।
প্রশ্ন: বর্তমানে বাম রাজনীতির অবস্থা কোন পর্যায়ে? বাম রাজনীতিকে আরো শক্তিশালী করতে কি রকম পদক্ষেপ নেয়া দরকার?
রুহিন হোসেন প্রিন্স : বাংলাদেশের বাম রাজনৈতিক দলগুলোকে দেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ দেখতে চায়। এটা এখনো করা যায়নি; কিন্তু রাম রাজনৈতিক দলগুলো মানুষের স্বার্থে দায়িত্ব পালন করে চলেছে। বাম রাজনীতির প্রধান কাজ হলো তার নিজস্ব শ্রেণি-অর্থাৎ শ্রমজীবী মানুষের মধ্যে লেগে-পড়ে থেকে কাজ করা, বাংলাদেশের প্রচলিত রাজনীতির বিকল্প তুলে ধরা, জনগণের কাছে নিজেদেরকে নিষ্ঠাবান বিকল্প ব্যক্তি হিসেবে তুলে ধরা, এই কাজটি গুরুত্ব দিয়ে করতে হবে। এর জন্য প্রয়োজন, তরুণ কর্মীদের এগিয়ে আসা। সারাদেশেই এক দল কর্মীবাহিনীকে নিয়ে এই কাজটি করতে হবে।
প্রশ্ন: বাম রাজনীতিকে সাধারণ মানুষের কাছাকাছি নেয়া সম্ভব হচ্ছে না কেন?
রুহিন হোসেন প্রিন্স : অধিকাংশ জনগোষ্ঠীকে বামপন্থীদের কাছে নিয়ে না আসতে পারার প্রধান দায় বামপন্থীদেরকেই নিতে হবে। তবে, বর্তমান সমাজ ব্যবস্থায় যে সংকট চলছে- বৃহৎ রাজনৈতিক দলগুলো রাজনীতিকে এমনই দুর্বৃত্তায়নের মধ্যে ফেলে দিয়েছে, যার থেকে জনগণকে উদ্ধার করে সঠিক পথে আনতে আরো সময় লাগবে।
প্রশ্ন: বাম রাজনীতির মাধ্যমে সমাজতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠিত হলে অন্যান্য রাজনৈতিক দলের তুলনায় কি পার্থক্য থাকবে?
রুহিন হোসেন প্রিন্স : বামপন্থীরা সমাজতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে চায়। এই সমাজটা হবে-‘প্রত্যেকেই যোগ্যত অনুযায়ী কাজ পাবেন এবং কাজ অনুযায়ী পারিশ্রমিক পাবেন।’ এ ধরণের সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে গেলে অনেকগুলো পূর্ব শর্ত পুরণ করতে হবে। পুরনো সমাজের গলদ দূর করতে এর বিপরীতে নিষ্ঠাবান কর্মীবাহিনী ও জনগোষ্ঠীকে সচেতন করতে হবে। এ জন্য জনগণের মতামত নিয়েই কর্মসূচী প্রণয়ন করা হবে; ওই কর্মসূচী বাস্তবায়নে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হবে। কঠোর হাতে সাম্প্রদায়িকতা দমন, লুটপাট বন্ধ, সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন প্রতিরোধ করতে জনগণের মধ্যে সাংস্কৃতিক সংগ্রাম বেগবান করা হবে। এসব কাজকে প্রাধান্যই দিয়ে বর্তমান প্রচলিত রাজনৈতিক দলের সরকারের কর্মকান্ডের পার্থক্যকে স্পষ্ট করে তুলে।
প্রশ্ন: দেশের শিক্ষা পদ্ধতি কেমন মনে হয়? শিক্ষা ব্যবস্থা কি রকম হওয়া চায় বলে মনে করেন?
রুহিন হোসেন প্রিন্স: আমাদের দেশের বিভিন্ন ধারার শিক্ষা পদ্ধতির প্রচলন রয়েছে। সহজভাবে বলি, একধরণের মানুষকে আলো দেয়ার পরিবর্তে অন্ধকারের পথ দেখায়, আর একধরণের পদ্ধতি কেরাণী তৈরি করে, আর একধরণের পদ্ধতি শ্রমজীবি মানুষের ছড়ি ঘোরানো মানুষ তৈরি করে। শিক্ষার আলোকে আলোকিত করে সমাজকে পুরোপুরি অগ্রসর করার পথ দেখায় না। শিক্ষা আর এখন অধিকার নেই- এটি সুযোগ এবং ব্যবসায় পরিণত হয়েছে। আমরা গণমুখী-বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষা চাই। গণমুখী অর্থ সকলের জন্য শিক্ষা- আর বিজ্ঞানভিত্তিক অর্থ এমন শিক্ষা, যা সমাজের কাজে লাগে। এই গণমুখী বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষা ব্যবস্থার দায়িত্ব রাষ্ট্রকে নিতে হবে।
প্রশ্ন: সাম্রাজ্যবাদ-সাম্প্রদায়িক অপশক্তি এদেশকে ঘাপটে ধরেছে; এ থেকে মুক্ত হওয়ার উপায় কি?
রুহিন হোসেন প্রিন্স : দু’শ বছরের ব্রিটিশ গোলামি আর পাকিস্তানি শাসনের সময়ে লালিত সাম্প্রদায়িকতা-সাম্রাজ্যবাদ থেকে আমরা মুক্তি পায়নি। শুধু আমরা নয়, পৃথিবীর দেশে-দেশে এদের তাণ্ডব পুরো মানব সভ্যতাকে এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে প্রধান বাধা হিসেবে আবির্র্ভূত হয়েছে। আমাদের দেশে বিভিন্ন দল এবং শক্তিও এদের লালন-পালনকর্তা। এরা আর্থিকভাবেও ব্যাপক শক্তি অর্জন করছে। তাদের থেকে মুক্তি পেতে মানবতাবোধ, দেশপ্রেমিকতা জাগিয়ে তুলাটাই হবে প্রধান কর্তব্য। এর মধ্য দিয়ে গণজাগরণ সৃষ্টি করতে হবে। এই গণজাগরণই সাম্প্রদায়িকতা, সাম্রাজ্যবাদমুক্ত বাংলাদেশ উপহার দিতে পারে।
প্রশ্ন: পর্যটন রাজধানী কক্সবাজারের উন্নয়নে কোন ধরণের মাস্টার প্ল্যান দরকার বলে মনে করেন?
রুহিন হোসেন প্রিন্স : পর্যটন নগরী কক্সবাজারকে পরিকল্পিতভাবে গড়ে তুলতে রাষ্ট্রকে ভূমিকা রাখতে হবে। এর জন্য সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা নিয়ে এগাতে হবে। এই কাজটি পরিকল্পিতভাবে হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে না। এর পাশাপাশি সমুদ্রের সম্পদের যথাযথ ব্যবহারের দিকে নজর দিতে হবে। স্থানীয় উন্নয়ন কর্মকান্ডে স্থানীয় মানুষের অংশগ্রহণ বাড়াতে হবে। সমুদ্র সৈকতে সৌন্দর্য বর্ধনে পরিবেশ বান্ধব ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানের সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন করতে হবে। কক্সবাজার এবং তার আশপাশ জুড়ে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করার পথ সুগম করতে হবে। প্রাকৃতিক পরিবেশ অক্ষুণ্ন রেখে এসব কর্মকান্ড সম্পন্ন করতে পারলেই, কক্সবাজার শুধু পর্যটন নগরী হিসেবে গড়ে উঠবে না-তা আমাদের জাতীয় আয়ের ক্ষেত্রে বিরাট অবদান রাখতে সক্ষম হবে। বঙ্গোপসাগরের নিচে যে প্রাকৃতিক সম্পদ পাওয়ার খবর পাওয়া গেছে, তা যেন লুটপাটকারীরা কোন অযুহাতেই লুটপাট করতে না পারে; এটিও দেখতে হবে।
প্রশ্ন: সমাজটাকে বদলানো যায় কিভাবে?
রুহিন হোসেন প্রিন্স: সমাজ তো মানুষ নিয়েই তৈরি। সুতরাং, সমাজ বদলানোর অর্থ হলো মানুষগুলোকে বদলানো। মানুষদের পাশাপাশি পশুত্বও বাস করে। এই পশুত্ব দমন করাটাই একটা প্রধান কাজ। এর জন্য প্রয়োজন নিরন্তর সাংস্কৃতিক সংগ্রাম। এর মধ্য দিয়ে উন্নততর মানসিকতা গড়ে উঠবে। সেই মানুষগুলোই সমাজ বদলানোর সংগ্রাম অগ্রসর করতে পারবে।
প্রশ্ন: কলুষিত অবস্থা থেকে মুক্ত করে ছাত্ররাজনীতির ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে আনা যায় কিভাবে?
রুহিন হোসেন প্রিন্স: আমি দু’টো দিক বলতে চাই- প্রথমত, সামগ্রিকভাবে কলুষিত রাজনীতির আছর পড়েছে, তাই কলুষিত রাজনীতিমুক্ত করার সাথে ছাত্ররাজনীতিকেও এতিহ্যের ধারায় ফিরিয়ে আনার প্রশ্নটি যুক্ত রয়েছে। দ্বিতীয়ত, অতীতে আমরা ছাত্ররাজনীতি না বলে- বলতাম ছাত্র আন্দোলন। ছাত্ররা নিজস্ব দাবিতে ঐক্যবদ্ধ হতো, আন্দোলন-সংগ্রাম গড়ে তুলতো। নিজেকে সৎ, যোগ্য, আদর্শবান নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার কাজটি করতো। এই ধারাটি ফিরিয়ে আনতে পারলেই ছাত্র রাজনীতি তার ঐতিহ্যের ধারায় ফিরে আসবে। এর জন্যই ঐতিহ্যের ধারক ছাত্র ইউনিয়নসহ অন্যান্য বাম প্রগতিশীল সংগঠনকে পরিকল্পিতভাবে ছাত্রদের মাঝে অবস্থান সৃষ্টি করতে হবে।
প্রশ্ন: যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া কিভাবে নিশ্চিত করা সম্ভব বলে মনে করেন?
রুহিন হোসেন প্রিন্স : যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বাংলাদেশে হতেই হবে। সরকারের এক্ষেত্রে যেভাবে পদক্ষেপ নেয়ার কথা ছিল, সেভাবে না হলেও কাজ শুরু করেছে -এটি একধাপ অগ্রগতি। মাঠে এ দাবিতে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করতে সংগ্রাম পরিচালনার মধ্য দিয়ে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করা সম্ভব।
প্রশ্ন: স্বাধীনতার ৪০বছর পরবর্তী আপনার ভাবনা কী?
রুহিন হোসেন প্রিন্স: স্বাধীনতার ৪০ বছর পরেও আমরা অন্যতম প্রধান সংকট দেখছি- বাংলাদেশ এক থাকলেও দুই অর্থনীতি বিরাজ করছে। একদিকে মেহনতি মানুষ, অন্যদিকে লুটেরা শ্রেণী এই অবস্থার অবসান ঘটিয়েই বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন করতে হবে। বর্তমান এবং বিগত দিনের শাসকরা এই কাজটি করতে ব্যর্থ হয়েছে। এদের বিপরীতে নতুন জাগ্রত শক্তিই পারে প্রকৃত স্বাধীনতার স্বাদ জনগণের কাছে তুলে দিতে।
প্রশ্ন: সাম্প্রদায়িক রাজনীতি নিষিদ্ধ করার ব্যাপারে আপনার মন্তব্য কী?
রুহিন হোসেন প্রিন্স : মুক্তিযুদ্ধের চেতনার মধ্য দিয়ে অর্জিত সংবিধানের বাস্তবায়ন করতে পারলেই সাম্প্রদায়িক রাজনীতি বন্ধ হয়ে যায়। আনুষ্ঠানিকভাবে এই কাজটি করতে হবে; এর পাশাপাশি এই অপশক্তির মধ্যে মানবতা জাগ্রত করেই তাদের সমূলে উৎপাটন করতে হবে।
প্রশ্ন: এতক্ষণ সময় দেয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
রুহিন হোসেন প্রিন্স : আপনাকেও ধন্যবাদ। আজকে এদেশের তরুণ প্রজন্মকে সচেতন হতে হবে এবং জনগণের পক্ষে পরিবর্তন সাধন করতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে। আপনার লেখনির মাধ্যমে এই কাজটি অগ্রসর হবে-এটি আমার প্রত্যাশা।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2023 Rising Cox
Theme Customization By NewsSun