নিজস্ব প্রতিবেদক
কক্সবাজারের টেকনাফের নয়াপাড়া রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরে সন্ত্রাসীদের গুলিতে আহত হাবিবুল্লাহ (২০) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। হাবিবুল্লাহ উপজেলার পশ্চিম লেদার নয়াপাড়া এক্সটেনশন রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরের আই-৮ ব্লকের বাসিন্দা হোসেন আহমদের ছেলে। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা গেছেন বলে জানান রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরের ব্যবস্থাপনা কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জাফর।
পারিবারিক সুত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার (৪ আগষ্ট) সকালে চট্রগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়ের পশ্চিম লেদা নুরালী পাড়ার মোহাম্মদ হোছনের ছেলে চালক হাবিব উল্লাহ (২৩) মৃত্যু বরণ করেন। গত ১ আগষ্ট রাতে টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের পশ্চিম লেদা নুরালী পাড়ার মোহাম্মদ হোছনের ছেলে চালক হাবিব উল্লাহ বাড়ি থেকে বের হয়ে গাড়ির শ্রমিকদেরকে বেতনের টাকা দিতে দোকানে যাচ্ছিল। এসময় একই এলাকার মো. নুরের ছেলে ছৈয়দ নুর,মকতুল হোছনের ছেলে আক্তার হোছন, মো. হাসিমের ছেলে মো. রাসেল, আবুল হোছনের ছেলে আব্দুর রহমান, পূর্ব লেদার আবুল কালামের ছেলে মো. নাসিম, মো. জমিল প্রকাশ টুনুর ছেলে রবিউল হাসান, আবুল হোছনের ছেলে আব্দুল আঊয়াল ওরফে গুরা পুতিয়া, রোহিঙ্গা কবির হোছনের ছেলে বেলাল হোছন এবং রোহিঙ্গা নুরুল হক প্রকাশ লাল বুইজ্জার ছেলে জুনাঈদ ওরফে লাম্বাইয়াসহ স্বশস্ত্র একটি গ্রুপ তার পকেটে থাকা টাকা ও মুঠোফোন হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। এসময় সে বাঁধা দিয়ে তর্কে জড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে ডাকাত বলে চিৎকার দিলে সামনে থেকে গুলিবর্ষণ করে দূবৃর্ত্তরা পাহাড়ের দিকে পালিয়ে যায়। তাকে দ্রুত উদ্ধার করে লেদা আইএমও হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর গভীর রাতে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে রেফার করা হয়। সেখানে অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় গুলিবিদ্ধ হাবিব উল্লাহকে চট্রগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ সকালে সেখানে তার মৃত্যু ঘটে। আইনী প্রক্রিয়া শেষে নিহতের মৃতদেহ বাড়িতে আনার প্রস্তুতি চলছে।
নয়াপাড়া রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পের ব্যবস্থাপনা কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জাফল বলেন, গুলিবিদ্ধ আহত হাবিবুল্লাহ সঙ্গে থাকা পরিবারের লোকজন মারা যাওয়ার খবর নিশ্চিত করেছেন। লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে নেওয়া হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে টেকনাফে নিয়ে আসা হবে। এ ব্যাপারে এপিবিএন পুলিশ ও রোহিঙ্গা শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের সহকারী শিবিরের (ইনচার্জ) কে অবহিত করা হয়েছে। গত সোমবার রাত নয়টার দিকে টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের পশ্চিম লেদার নয়াপাড়ায় হাবিবুল্লাহর কাছ থেকে ৮-১০ অজ্ঞাত অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী মুঠোফোন ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। এসময় হাবিবুল্লাহ তাদের বাধা দিলে তাকে গুলি করা হয়।
মোহাম্মদ জাফর আরো বলেন, গত সোমবার রাতে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা ডাকাতির জন্য আশ্রয় শিবিরে প্রবেশের চেষ্টা করছিল। হাবিবুল্লাহ বিষয়টি দেখে ফেললে অস্ত্রধারীরা হাবিবুল্লাহর কাছ থেকে মুঠোফোন ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চালায়। একপর্যায়ে হাবিবুল্লাহকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে তারা। পরে হাবিবুল্লাহকে উদ্ধার করে লেদা আইওএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। পরে সেখান থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাকে নিয়ে যাওয়া হয়। ’
হ্নীলা ইউপি চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী জানান, হ্নীলা ইউনিয়নের প্রত্যন্ত এলাকার অবৈধ অস্ত্রধারীদের আইনের আওতায় এনে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ফিরিয়ে আনা হবে।
টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. হাফিজুর রহমান জানান,এ ঘটনার বিষয়ে অভিযোগে পেলে তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।