আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বোমা ফেলার সময় কোনো শব্দ বা ধোঁয়া নির্গত হয় না। মাধ্যাকর্ষণকে কাজে লাগিয়ে মুক্তভাবে লক্ষ্যে আঘাত হানতে সক্ষম এই বোমা। ফলে ড্রোনের মাধ্যমে বহন করতে পারা এই বোমা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আগে থেকে চিহ্নিত করাও সম্ভব হয় না। ইউএভি বা মানববিহীন বায়বীয় বাহনকে সাধারণভাবে ড্রোন বলে উল্লেখ করা হয়। মানববিহীন এই উড়োযানের সর্বশেষ ইসরায়েলি সংস্করণটি প্রায় এক টন পর্যন্ত বোমা বহনে সক্ষম বলে জানা গেছে।
দুই দশক চরম গোপনীয়তার মধ্যে পরীক্ষা-নীরিক্ষার পর গত জুলাইয়ে ইসরায়েল প্রথমবারের মতো এই ড্রোনের তথ্য জনসম্মুখে প্রকাশ করে। নভেম্বরে ইসরায়েলের এক জেনারেল এ বিষয়ে জানান, এই ড্রোন পরিচালনায় বিমানবাহিনীর সঙ্গে গোলন্দাজ বাহিনীও কাজ করে। পার্শ্ববর্তী ফিলিস্তিন অঞ্চলের পাশাপাশি দূরের ইরান, এমনকি আফ্রিকার সুদান পর্যন্ত বোমা বহন করে নিয়ে যেতে সক্ষম এই ড্রোন। এই ড্রোন দূর থেকে নিয়ন্ত্রণ করা হয় এবং বোমা ফেলা ছাড়াও নজরদারির জন্য আকাশ থেকে নিচের ভিডিও গ্রহণ করে তা প্রেরণ করতেও সক্ষম।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে ইসরায়েলের এক জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, দেশটির সশস্ত্র ড্রোন বহরে যাত্রীবাহী বিমানের আকারের হিরন টিপি নামে একধরনের ড্রোন রয়েছে। এই ড্রোনের মালিক রাষ্ট্রায়ত্ত ইসরায়েল এরোস্পেস ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। এ ছাড়া এলবিট সিস্টেমস লিমিটেডের অপেক্ষাকৃত ছোট আকারের হারমিসও রয়েছে এই বহরে।
এই কর্মকর্তা আরো জানিয়েছেন, হিরন টিপি ইসরায়েল সেনাবাহিনীর কাছে থাকা সবচেয়ে ভারী ড্রোন এবং প্রায় এক টনের কাছাকাছি গোলাবারুদ বহনে সক্ষম।
রয়্যাল ইউনাইটেড সার্ভিসেস ইনস্টিটিউটের তথ্যমতে, মধ্যপ্রাচ্যে সবচেয়ে বড় ড্রোন বহর পরিচালনাকারী দেশে পরিণত হয়েছে ইসরায়েল।
রয়টার্সকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ইসরায়েলি সামরিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এই ড্রোনগুলো সরকারের সঙ্গে সরকারের চুক্তির মাধ্যমে বিক্রি করা হবে। ফলে এর তথ্য জনসম্মুখে প্রকাশের প্রয়োজন পড়বে না।
এই ড্রোনে বহনকারী বোমা, ‘মাধ্যাকর্ষণের টানে নিচে পড়বে এবং এর গতি শব্দের বেগ পর্যন্ত পৌঁছনোর ক্ষমতা রাখে।’
যুক্তরাষ্ট্রের ড্রোন থেকে নিক্ষেপ করা হেলফায়ার মিসাইল ব্যবস্থার মতো এই বোমা থেকে শব্দ বা জ্বালানির ধোঁয়া নির্গত হয় না। তাই এর শব্দ বা ধোঁয়া দেখে আগে থেকে কেউ ড্রোন আক্রমণ সম্পর্কে ধারণা করতে পারবে না।
সূত্র : ডয়চে ভেলে
Leave a Reply