1. kalamazad28@gmail.com : risingcox.com : Rising Cox
  2. msalahuddin.ctg@gmail.com : RisingCox :
  3. engg.robel@gmail.com : risingcoxbd :
বৃহস্পতিবার, ৩০ মার্চ ২০২৩, ০১:৫৯ অপরাহ্ন

চার বৃদ্ধকে কান ধরিয়ে শাস্তি, বিতর্কিত প্রত্যাহার এসি ল্যান্ড

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, ৩০ মার্চ, ২০২০
  • ৪ Time View

রাইজিং কক্স ডেস্ক : যশোরের মণিরামপুর উপজেলায় মাস্ক না পরায় চার বৃদ্ধকে কান ধরানোর ঘটনায় বিতর্কিত এসি ল্যান্ড সাইয়েমা হাসানকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। যশোরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ শফিউল আরিফ গতকাল শনিবার সকালে তাঁকে প্রত্যাহার করেন।

এ ঘটনায় প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে প্রশাসনের ভেতরেও। প্রশাসনের কর্মকর্তারা সাধারণত নিজেদের ঘটনায় এত প্রতিক্রিয়া দেখান না। কিন্তু মণিরামপুরের ঘটনায় অনেক কর্মকর্তা নিন্দা জানিয়েছেন। আর প্রতিটি ব্যাচের অভ্যন্তরীণ ফেসবুক গ্রুপেও চলছে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা। তবে ভিন্নমতও আছে।

আমাদের মণিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি জানান, এসি ল্যান্ড সাইয়েমা হাসানকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়ে সেখানে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সুফল চন্দ্র গোলদারকে। সুফল চন্দ্র এরই মধ্যে মণিরামপুরে দায়িত্ব পালন শুরু করেছেন। তিনি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে সিনিয়র কমিশনার ও ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা (ভূমি ও হুকুম দখল শাখা) হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

মণিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আহসান উল্লাহ শরিফী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, গত শুক্রবার বিকেলের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় এসি ল্যান্ড সাইয়েমা হাসানকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন জেলা প্রশাসক।

করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে মানুষকে ঘরে থাকার নির্দেশনা বাস্তবায়নে শুক্রবার বিকেলে মণিরামপুরের চিনাটোলা ও কোনাকোলা বাজারে অভিযান পরিচালনা করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি বা এসি ল্যান্ড) সাইয়েমা হাসান। কোনাকোলা বাজারে একজন দিনমজুরকে কান ধরে উঠবোস করান তিনি। তিনি নিজেই মোবাইল ফোনে সেই দৃশ্য ধারণ করেন। চিনাটোলা বাজারে তরকারি বিক্রেতা দক্ষিণ লাউড়ি গ্রমের আসমতুল্লাহ (৭২), একই গ্রামের ভ্যানচালক বাবর আলী (৬০) ও আরেক ভ্যানচালক দক্ষিণ শ্যামকুড় গ্রামের নূর আলীকে (৬২) কানে ধরান তিনি। ওই দিন রাত থেকে সেই ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হতে থাকে। এসিল্যান্ডের বিরুদ্ধে সমালোচনাও শুরু হয়।
যশোরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আরিফ কালের কণ্ঠকে বলেন, সাইয়েমা হাসানকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কার্যক্রমও শুরু হয়েছে। তিনি আরো বলেন, ৪ এপ্রিলের আগেই তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।

এদিকে লাঞ্ছিত তিন বৃদ্ধের বাড়িতে যান ইউএনও আহসান উল্লাহ শরিফী। গতকাল দুপুর ১২টার দিকে থানার ওসি রফিকুল ইসলামকে সঙ্গে নিয়ে তিনি খাদ্যদ্রব্য নিয়ে তাঁদের বাড়িতে যান। ইউএনও তাঁদের ঘর তৈরি করে দেওয়ার ঘোষণা দেন। স্থানীয় শ্যামকুড় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মনি উপস্থিত ছিলেন। তাঁর পক্ষ থেকেও তিনজনকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে বলে তিনি জানান।

ইউএনও বলেন, ‘আমি তাঁদের বাড়িতে গিয়ে ঘটনার বিষয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছি। তাঁদের হাত ধরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষমা চেয়েছি।’

তবে কোনাকোলা বাজারে যে দিনমজুরকে কান ধরে উঠবোস করানো হয়েছে তাঁর সঙ্গে প্রশাসনের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয়নি।

মণিরামপুরের এ ঘটনায় জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বিষয়টা খুবই বিব্রতকর। প্রকৃত ঘটনা উদ্ঘাটন করে দ্রুত যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, ডিসিদের বলা হয়েছে, প্রশাসনের কর্মচারীরা যেন মানুষের সঙ্গে সম্মানজনক আচরণ করেন।

এ ছাড়া প্রশাসনের কর্মকর্তাদের কেউ কেউ নজিরবিহীনভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দিয়ে নিজেদের ক্ষোভ জানিয়েছেন, যা আগে কখনো দেখা যায়নি। বর্তমানে ডিসিদের মধ্যে বেশির ভাগই ২১ ব্যাচের কর্মকর্তা। উপসচিব ও ২১ ব্যাচের সভাপতি ধনঞ্জয় দাস সায়ন্ত তাঁর ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আমি দুঃখিত, আমি লজ্জিত’। একই ব্যাচের আরেক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে কালের কণ্ঠকে বলেন, চাকরিতে ঢুকেই কিছু কর্মকর্তা বেপরোয়া হয়ে যান। এটার রাশ না টানলে প্রশাসন ক্যাডারের মান ধূলিসাৎ হয়ে যাবে। ৩৫ ব্যাচের কর্মকর্তা সোহেল আকন্দ তাঁর ফেসবুকে লিখেছেন, ‘প্রজাতন্ত্রের একজন কর্মচারী হিসেবে আমি লজ্জিত। এমন কুৎসিত দৃশ্য দেখতে চাই না আর। প্রজাতন্ত্রের মালিকদের যথাযথ সম্মান নিশ্চিত হোক।’

তবে ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও গণমাধ্যমে যেভাবে এসেছে তা পুরোপুরি গ্রহণ করতে রাজি নন কেউ কেউ। প্রশাসনের ১৩ ব্যাচের সভাপতি ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্ম সচিব শফিউল আজিম তাঁর ফেসবুকে লিখেছেন, ‘যিনি কাজ করেন তিনি ভুল করতেই পারেন, নবীন কর্মকর্তাদের আত্মশুদ্ধির সম্মানজনক সুযোগ দেওয়া দরকার।’ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একজন উপসচিবের মতে, যারা কাজ করে না তাদের কোনো দোষও নেই। কাজ করতে গেলেই ভালো-মন্দ হবে। তাই বিষয়গুলোতে আবেগে সিদ্ধান্ত না নিয়ে প্রকৃত ঘটনা খতিয়ে দেখতে হবে।

জনপ্রশাসনসচিব শেখ ইউসুফ হারুণ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘দোষ প্রমাণিত হলে তদন্ত করে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এ বিষয়ে বক্তব্য জানার চেষ্টা করলেও সাইয়েমা হাসানের মোবাইল ফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। তবে প্রশাসনিক সূত্রে তাঁর একটি লিখিত ব্যাখ্যা কালের কণ্ঠ’র হাতে এসেছে। এতে তিনি আত্মপক্ষ সমর্থন করে বলেছেন, ‘বৃদ্ধদ্বয় নিজেরা প্রশাসনের গাড়িবহর ও কর্মকর্তাদের দেখে অনেকটা ভয়ে কানে ধরে দাঁড়িয়ে পড়েছিলেন। পুরো বিষয়টিই ছিল অনাকাঙ্ক্ষিত।’ এর জন্য তিনি ক্ষমা চেয়েছেন।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2023 Rising Cox
Theme Customization By NewsSun